Tuesday, June 9, 2015

বন্ধুত্ব নাকি প্রেম? by TApos


পার্সোনাল ব্লগ- ২
 বন্ধুত্ব নাকি প্রেম? ফোনটা বাজতেছে। রিতা অপরিচিত কোন নম্বর থেকে ফোন ধরে না। ফোন বেজেই চলে। ১০/১২ বার রিং হয়। তারপর আর ফোন বাজে না। রাত ১২ টার দিকে রিতার মনে হল কে ফোন করলো? কেন ফোন করলো? নানান প্রশ্ন জাগে। ছোট্ট করে একটা মিস্টকল দেয় রিতা।

কিছুক্ষন পর কল ব্যাক......

 রিতা- কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো। হ্যালো না বলে।
ছেলেটি- আপনি মিস্টকল দিলেন।এখন কথা বলছেন না. কে আপনি?

 রিতা- অনেকটা বিব্রত কন্ঠে বললো সকালে আপনি অনেকবার ফোন দিছিলেন তো তাই.
.
ছেলেটি- সরি আপু।।আসলে ভুল করে চলে গেছিল।

 রিতা- ইটস ওকে! নাম কি আপনার?
 ছেলেটি- রুদ্র..
 রিতা - শুধু রুদ্র? নাকি আগে পরে কিছু আছে?

রুদ্র- সরি! রুদ্রনীল রায়।
রিতা- ওকে রাখি..

 রুদ্র- শোনেন শোনেন.... আপনার নামটা বলবেন না?

 রিতা- অপরিচিত কাহকে পরিচয় দেই না।। রাখি।বাই।

 বলে রিতা ফোনটি রেখে দিল। ফোন রাখার সময় রুদ্র অনেক বার হ্যালো হ্যালো, প্লিজ শোনেন? এমন করেছে। রিতার ঘুম আসে না। মনে মনে ভাবে রুদ্র মনে হয় ফোন দিবে। কিন্তু আসেনা। পরের দিনও ফোন আসেনা। রিতার কেমন যেন হচ্ছে। মনে মনে খারাপ লাগছে। ইস নাম টা বললে ভালই হতো, কেন বললাম না? নানান চিন্তা।আর ভাবে রুদ্র সাধারন কোন ছেলে নয়।। পরেরদিন রিতা রাত ১ টার দিকে কল করে রুদ্রর নম্বরে। ওপাস থেকে

 রুদ্র-কেমন আছেন?

 রিতা- ভাল. আপনি?
রুদ্র- ভালই। হঠাপ আমার নম্বরে ফোন?

রিতা- ওকে তাহলে রাখি..?

রুদ্র- না না না।।আজ একবার শোনেন?

রিতা- বলেন?

রুদ্র- নামটা বলেন?

রিতা- নাম সব পুরা ঠিকানা বললো।

 দুজনের মধ্যে ভালই বন্ধুত্ব হয়ে গেল। দুজন দেশের দুপ্রান্তে। একজন রংপুর অন্যজন খুলনা। রুদ্র খুলনার একটা কলেজে ২য় বর্ষে পড়ে। আর রিতা সবে এইস এস দিবে। এভাবে চলতে থাকে ফোনে কথা হয় কম। হয়না বললেও চলে। তবে মোবাইলে sms এ সারাদিন মেসেজিং করতো দুজন। আর একসময় দুজন দুজনকে অনেক বেশি নিজের সম্পর্কে জানিয়ে দিল। রিতা রুদ্রকে তুমি করে ই বলতো। মাঝে মাঝে ঝগড়া বিবাদ হতে আবার মিটে যেত।তবে প্রচুর শেয়ার করতো দুজন। রিতার সারাদিন ঘটে যাওয়ার টুকরো ঘটনার একমাত্র সাক্ষী রুদ্র। এভাবে চলে যাচ্ছে দিন। এইস এস সি দেওয়ার পর দুজন ফেসবুকে চ্যাট ছবি শেয়ার করতো। এভাবে চলে দিন।দুজন দুজনকে অনেক বিশ্বাস করে। এতোটাই করে যে কখনো হারাতে চাইনা কেহ কাহকে। তবে কেহ কাহকে দেখিনি, স্পর্শ করিনি তভুও কত টান। এভাবে চার বছর কেটে যায়। মনে মনে রুদ্র রিতাকে আর রিতা রুদ্রকে ভালবেসে ফেলে।কিন্ত দুজনি ভাবে যদি বলি তাহলে ও যদি রাগ করে।।এমন ভেবে কেহ কাহবে বলে না। একপর্যায়ে রুদ্র একপা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জব পাই। তবে ঘটনাটি রিতাকে জানাই নাই। এদিকে রিতার বিয়ের জন্য পাত্র আসছে এ বিষয় টা রিতা রুদ্রকে বলেনাই। ফোন দিল রুদ্র

 রিতা- হ্যালো. কেমন আছো?

রুদ্র- সারপ্রাইজ আছে তোমার জন্য..

রিতা- কিন্তু আমার জন্য খারাপ সংবাদ আছে।

রুদ্র- ওকে আগে বল কি খারাপ সংবাদ? তারপর এটা দিয়ে ভাল করে দিব।


 রিতা- কাদতে কাদতে বললো বাবা আমাকে বিয়ে দিবে। আমি করবো।

রুদ্র- ( মাখার মধ্যে ঘুরতে লাগবো) মনে মনে ভাবছে বলে দিব মনের কথাটা। না থাক। কোন দিন সম্ভাব না।।

রিতা- চুপ করে রইলে যে?

রুদ্র- অহ।।।সরি। কন্ঠটা নরম করে বলে তুমি কি কাহকে ভালবাস? বলতে যেয়ে গলাটা কেপে গেলো রুদ্রর।

রিতা- তুমি বোঝনা?


 বলে রিতা জোর করে কান্না করতে লাগলো।

 রুদ্র- না বললে বুঝবো কেমনে?

 রিতা- I love You রুদ্র...

রুদ্র- কি বলবে বুঝে পারছে না।

কাদতে কাদতে রুদ্র বললো i love you.... রিতা। ইমোসন অবস্খায় চাকরির শুভ সংবাদ টা আর দেওয়া হলনা রিতাকে। ভাবছে রুদ্র। আর রিতা ঐ রাতে বাড়িতে বললো যে রিতা রুদ্রকে ভালবাসে।

রিতার বাবা বলে ছেলে কি করে শুনি?

রিতা- MBA শেষ।

চাকরি খুজতেছে।( কতক্ষণ রিতা জানেনা যে রুদ্র চাকরি পেয়েছে।)

 বাবা- বেকার? কি খাওয়াবে তোমাকে?

রিতা- চাকরি পেয়ে যাবে.. তাছাড়া ও আয় করে তো।

 বাবা- ওসব বাদ।কাল ঢাকা থেকে এক ছেলে পক্ষ আসবে রেডি থাকবা।আর তোমার ফোনটা দাও তো।


 রিতা- কেন? আমি ওকে ছাড়া কাহকে বিয়ে করবো না।

 তারপর রিতার বাবা রিতার গালে থাবা বসিয়ে দিয়ে ফোন নিয়ে নেই। রুদ্র শুসংবাদটা জানানোর জন্য রাতে ফোন দেয়।

রিসিফ করে রিতার বাবা বলে - তুমি এরপর থেকে আমার মেয়ের সাথে যোহাযোগ করবা না।।ওর ভাল জায়গায় বিয়ে হচ্ছে। যদি তুমি রিতার ভাল চাও তাহলে কাল তোমার কোন বন্ধুকে দিয়ে রিতাকে ফোন দিয়ে বলতে বলবা তুমি মারা গেছো।তাহলে ও সহজে তোমায় ভুলতে পারবে।সুখি হতে পারবে।

 রুদ্র- কি করবে কিচ্ছু বুঝতে পারছে না।

পরের দিন সকালে রিতায় আগে ফোন দিল। কিন্তু ফোনটা রুদ্রর বন্ধু তোলে আর বলে যে

 " রুদ্র গতকাল রাতে স্ট্রক করে মারা গেছে"

 রিতা প্রথমে বিশ্বাস না করলেও পরে বাধ্য হয় বিশ্বাস করতে। স্নেস লেস হয়ে পড়ে রিতা।


 কাহিনী ইতি হতে পারতো কিন্তু না। তারপর রিতা আর বিয়ে করেনি। মন মরা ভাবে দিন কাটাতো। আর রুদ্রকে নিয়ে ভাবতো। ভাবতো ও মরেনি, বেচে আছে।

 কেটে গেলো আরো ৩ টা বছর।


 রুদ্র এখন কোম্পানির উচ্চ পদে জব করে ঢাকাতে। আর কখনো রিতাকে খোজ নেয় নি কারন রুদ্র রিতাকে শুধু ভালবাসতো না ভাল রাখতে ও চাইকে। তাই আস্তে আস্তে রিতাকে ভুলে যায়।ভাবে সে হয়তবা ঘর সংসার করছে।


এবার কাহিনি মজার রুদ্রর কোম্পানিতে কিছু ভাল লোক নিয়োগ হবে। তো ভাইবা বোর্ডে রুদ্র। এক এক করে ডাক হয় ভাইবা হয় চলে যায়। পিয়ন যখন বললে রিতা মল্লিক আসেন।

 তখন রুদ্রর মনের মধ্যে স্যাত করে উঠলো। চিন্তা করতে করতে রিতার রুমে প্রবেশ। কি একটা অবস্থা.....

 রিতাকে দেখে রুদ্র উঠে দাড়ালো। সবাই অবাগ। আর রিতা মনে করলো আমি কি ঠিক নাকি ভুল দেখছি।



 দিজন কাছে এসে একবিন্দু দেরি না করে জরিয়ে ধরলো দুজনকে। রিতা চিৎকার করে কাধতেছিল।সাথে রুদ্র। অফিসের সবাই হতবাগ। তারপর বিয়ে.....


.সুখে সংসার দুজনে এইউ অফিসে জব করে। দিন চলছে সুখে তাদের লেখা-



চোখের বালি- ০১/০৫/২০১৫ রাত ৩টা

No comments:

Post a Comment

Thanks